স্বদেশবিচিত্রা প্রতিবেদক : রংপুরের পীরগাছা উপজেলায় অজানা রোগে দুই শতাধিক গরু ও ছাগলের মৃত্যু হয়েছে। হঠাৎ জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মারা যাচ্ছে গবাদি পশু। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন উপজেলার শতাধিক ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক খামারি। স্থানীয়দের অভিযোগ, উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগকে বিষয়টি জানানোর পরও তারা কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
খামারিরা জানান, গত এক মাস ধরে পীরগাছা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ছড়িয়ে পড়েছে এই প্রাণঘাতী রোগ। আক্রান্ত পশুর শরীরে হঠাৎ তাপমাত্রা বেড়ে গিয়ে একদিনের মধ্যেই মৃত্যু হচ্ছে। ফলে অনেকেই আতঙ্কে পশুগুলো কম দামে স্থানীয় কসাইয়ের কাছে বিক্রি করে দিচ্ছেন, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় হুমকি তৈরি করছে।
অনন্তরাম গ্রামের মোজাফফর মিয়া জানান, আমার ৩টি গরু ও ৪টি ছাগল এই রোগে মারা গেছে। জীবনের সমস্ত সঞ্চয় দিয়ে গবাদিপশু পালন করেছিলাম। এখন আমি নিঃস্ব।
স্থানীয় খামারি খোকা মিয়া বলেন, একদিন জ্বর দেখা দিলো, পরদিনই মারা গেল। আমার ৬টি পশু মারা গেছে। আর আতঙ্কে বাকিগুলো পানির দরে বিক্রি করে দিয়েছি। গোয়ালঘর এখন শূন্য।
এদিকে খামারিরা অভিযোগ করেছেন, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা অফিসে থাকলেও সাড়া দেন না। একজন খামারি রবিউল ইসলাম বলেন, “অফিসে গেলেই দেখা যায় কর্মকর্তা ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের নিয়ে ব্যস্ত। আমরা কিছু বলতে পারি না।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে। সময়মতো প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা না নিলে পুরো উপজেলায় গবাদিপশুর বড় ধরনের বিপর্যয় নেমে আসতে পারে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. একরামুল হক মন্ডল বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, জনবল সংকটে আমরা ঠিকমতো মাঠে যেতে পারিনি, তবে আজ (বুধবার) থেকে দুটি টিম গরু ও ছাগলের টিকাদান শুরু করেছে। বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। ঢাকার বিশেষজ্ঞ দল এলেই প্রকৃত রোগ শনাক্ত করা যাবে।
তিনি আরও জানান, স্থানীয়ভাবে যা যা করা সম্ভব, তা করা হচ্ছে। তবে রোগটি যদি ছোঁয়াচে হয়, তবে দ্রুত প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।
স্বদেশবিচিত্রা/এআর